আজ: সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   | সময়: দুপুর ২:৪৮ |

কালাইয়ে ধানের ফলনে খুশি কৃষক, বীজ আলুর দামে দিশেহার কৃষক

লিটন তালুকদার, কালাই(জয়পুরহাট) প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটের কালাইয়ে হলুদ বর্ণে সেজেছে ফসলের মাঠ। চারিদিকে শুধু ধান আর ধান। মাঠে মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ।  চারিদিকে শুধু ধান আর ধান। মাঠ জুড়ে হলুদ বর্ণে সেজেছে ফসলের মাঠের ধান গাছ।  কখন কৃষকরা ঘরে আনবে সোনালী ফসল। প্রতি বছর  কৃষক তাদের রোপন করা স্বপ্নের সোনালী ফসল ধান কেটে আলু চাষ করে থাকেন। তাই এ সময়ে খুব ব্যাস্ত সময় পার করছেন তারা।

জানা গেছে,এ বছর শেষের দিকে বৃষ্টির হওয়াতে ধানের এসব জমির মাটি নরম থাকায় ধীর গতিতে চলছে ধান কাটার কাজ। তার পরেও অনেকে এ বাধা অপেক্ষা করে তাদের জমিতে আলু লাগানোর জন্য উৎপাদিত ফসল ধান কেটে ঘরে তুলছেন। কৃষকের কাঙ্খিত স্বপ্নের এ রোপা আমন মৌসুমে ধানের ভাল ফলন এবং দাম পেলেও  বীজ আলুর সংকটে ও মুল্য বৃদ্ধির কারনে দিশেহার কৃষক।

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দিগন্ত জোড়া সবুজ আর হলুদ রঙে সেজেছে রোপা আমন ধানের ক্ষেত। মাঠ জুড়ে ধানের সোনালী রঙ ধারণ করেছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছেন, জমিতে চারা লাগানোর পর থেকেই কৃষকেরা ভালো ফলনের আশায় সময়মতো নিবিড় পরিচর্যা, সার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। এ কারণে আবাদও ভালো হয়েছে। এছাড়াও এবার ক্ষেতে তেমন কোনো রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও নেই। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে কৃষকেরা পরিতৃপ্ত। এখন শুধু অপেক্ষার পালা নিরাপদে ধান ঘরে তোলার। কয়েক দিনের মধ্যে মাঠের সব সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা।  

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবার চলতি রোপাআমন মৌসুমে ১১হাজার ৯শ ৫০হেক্টর জমিতে ধান রোপন হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান রোপন হয়েছে ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে এবং উফশী জাতের ধান রোপন হয়েছে ১১হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নে জমিনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম  বলেন, এবার ৬ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছি। ফলনও ভালোই হবে বলে আশা করছি । তবে, বীজ আলুর অবস্থা দেখে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আগামী বছর থেকে যাতে বীজ আলুর সংকট না হয় এ জন্য কালাই উপজেলায় অধিক পরিমানে বীজ আলু বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

গ্রামতলা গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ধানের ফলনে ও বাজারে ধানের দাম খুশি। তবে বীজ আলুর সংকট ও দামে  খুশি হতে পারছিনা। প্রতি বছরের আমরা ধান কেটে বাজারে বিক্রি করে আলুর বীজ ক্রয় করে থাকি। এ বছর আগে থেকেই বীজের সংকট। এ রকম  হলে কৃষকের অস্তিত্ব থাকবে না।

কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, ইতিমধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ফলনও অনেক ভাল হচ্ছে। যেসব জমির ধান ৯০ ভাগ পেঁকে গেছে ওইসব জমির ধান কেটে নিতে  কৃষককে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি। আগামীতে এ উপজেলায় আলুর বীজ নিয়ে যেন কৃষকদের অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শুরু করেছি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top