(বয়স্ক ভাতা বন্ধ হওয়ার বিপন্ন জীবন)
আশরাফুজ্জামান কোটচাঁদপুর ( ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃ
মায়ের থেকে ছেলের বয়স বেশি, নির্বাচন অফিসের এমন ভুলে কপাল পুড়েছে ৯০ বছরের আমেনার।
বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন কোটচাঁদপুরের আমিনা খাতুন (৯০)। পরিচয় পত্রের বয়স ভূলে বন্ধ হয়েছে বয়স্ক ভাতার টাকা। এতে করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধা ওই নারী। ডিজিটালাইজটে ভাতার টাকা আটকে গেছে বলে জানালেন সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ।
জানা যায়, আমেনা খাতুন। বয়স ৯০ বছর বলে দাবি তাঁর পরিবারের। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন তিনি। তবে জাতীয় পরিচয় পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১০ সেপ্টম্বর ১৯৭২ সাল। সে অনুযায়ী তাঁর বর্তমান বয়স ৫২ বছর, অথচ তার বড় ছেলের বয়স এখন ৭২ বছর। আমেনা খাতুন ২০১৮ সালে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। সে থেকে ভাতা উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন আমিনা খাতুন।
সংসার জীবনে তিনি ছিলেন ৮ ছেলে / মেয়ের জননী। যার মধ্যে ছেলে আব্দুল বারেক, শওকত আলী, সরবত আলী,আব্দুল সাত্তার, মেয়ে অজুপা খাতুন, ফাতেমা খাতুন,জনী খাতুন। এত বড় সংসারে ছেলে /মেয়েরা ব্যস্ত তাদের পরিবারে নিয়ে। এ ছাড়া সারাদিন কাজ কর্ম করে যা আয় রোজগার করেন,তা দিয়ে তাদের সংসার চালাতেই হিমশিত খান, তারা এমনটাই জানালেন ছেলে আফজেল হোসেন। তিনি বলেন,৮ ভাই বোনের মধ্যে ১ ভাই মারা গেছে। আর বাকি আমরা যারা আছি প্রত্যেকে দিন মুজুর। কাজ না করলে সংসার চলে না।
তিনি বলেন, মা ২০১৮ সালের দিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। হঠাৎ করে ২১ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায় ভাতার টাকা। সে থেকে বেশ সমস্যার মধ্যে আছেন মা।
আফজেল বলেন,ভাতার টাকা পেলে মা তাঁর খরচ টা করতে পারতেন। তাহলে আমাদেরও একটু সমস্যার সমাধান হত। তিনি বিষয়টি সমাধান করে ভাতা টাকা চালুর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তব্যক্তিদের নিকট।
আমেনা খাতুন কোটচাঁদপুরের তালসার গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল প্রধানীয়ার স্ত্রী।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন,আগের দিনে এ সব ভাতা কার্ডে অনেক ভাবে করা হয়েছে। ২০২১ সালের পর সব কিছু ডিজিটালাইজ হওয়ার পর তাঁর ভাতা টাকা অটোমেটিক ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কারন হিসেবে তিনি বলেন, আগে জন্ম নিবন্ধন দেখে ও চেয়ারম্যান মেম্বরদের সুপারিশে বয়স বেশ কম করে ভাতার কার্ড করা হয়েছে। এখন সেটা আর সম্ভব না। এখন সবকিছু সফটওয়্যারে চলে গেছে। বয়স না হলে ওই সফটওয়্যার অটো বাদ দিয়ে দিবেন কার্ডটি । ওখানে কারোর কিছু করার নাই।
ওই কর্মকর্তা বলেন,এখন ওনার কার্ড চালু করতে ভোটার কার্ড সংশোধন করতে হবে। সংশোধন হয়ে আসলে তাঁর কার্ড করে দেয়া সম্ভব হবে।
ভাতা বন্ধের জন্য দায় কে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই ভোটার তালিকা করার সময় যারা বয়স নির্ধারন করে লিখে ছিলেন তারাই এর জন্য দায়ি।