পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে গত রোববার বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই পাঞ্জাব অঞ্চল থেকে শ্রমিক হিসেবে গেছিলেন। এখনো পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই এই হামলার পিছনে জড়িত। পাকিস্তান পুলিশ সরকারিভাবে জানিয়েছে, ঘটনায় সাতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত, বেলুচিস্তানের পশ্চিমে পাঞ্জগুর অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রথম আক্রমণের পর আশপাশে বেশ কয়েকটি এলাকায় আরো হামলার ঘটনা ঘটে। বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুরোর বক্তব্য, তাদের এলাকায় বাইরের অঞ্চল থেকে কেউ এসে কাজ করতে পারবে না। গত অগাস্টে বেলুচ লিবারেশন আর্মি বেশ কিছু আক্রমণ চালায়। তাতে ৩৯ জন অন্য প্রদেশ থেকে আসা শ্রমিকের মৃত্যু হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হাইওয়েতে ট্রাক থামিয়ে বেছে বেছে শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করে। এর আগে গত মে মাসে গদর বন্দর শহরে সাত জন নাপিতকে একই কারণে হত্যা করা হয়েছিল। গত এপ্রিলে ১১ জন পাঞ্জাবি শ্রমিককে হত্যা করা হয়।
বেলুচিন্তানের অবস্থা ;
পাকিস্তানের গরিবতম অঞ্চলগুলোর অন্যতম বেলুচিস্তান। এই অঞ্চলে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং অন্যান্য অঞ্চলের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ পাঞ্জাবী। যারা পাকিস্তানের পাঞ্জাবী বলে পরিচিত। ব্যবসা- বাণিজ্যের পাশাপাশি সেনা এবং পুলিশ বাহিনীতেও পাঞ্জাবীদের আধিপত্য। আর এই কারণেই পাঞ্জাবীদের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাদের বক্তব্য, তাদের এলাকায় এসে পাঞ্জাবী ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকরা তাদের কাজ ছিনিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এবং চীনের ওপরেও তীব্র ক্ষোভ আছে বেলুচ বিচ্ছিন্নতবাদীদের। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের অন্যতম বন্দর গদর। যা বেলুচিস্তানের অংশ। বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরে অভিযোগ, তাদের এলাকায় ঢুকে চীন এবং পাকিস্তান তাদের জমি কেড়ে নিচ্ছে। উন্নয়নের নামে বেলুচদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে।