ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সম্প্রতি একের পর এক জঙ্গি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে। রেহাই পায়নি নিরস্ত্র সাধারণ মানুষও। শ্রমিক, চিকিৎসকদেরও গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলোর জন্য এবার ইসলামাবাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেল নেতা ফারুক আব্দুল্লাহ। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ফারুক আব্দুল্লাহর সংশয়, দেশভাগের সময় কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ না দেওয়ারই ‘বদলা’ নিচ্ছে ইসলামাবাদ। জম্মু ও কাশ্মীরের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান যদি এসব চালাতে থাকে, তাহলে একদিন যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। সেদিন আর কোনো কিছুকেই বাদ দেওয়া হবে না।’ উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য পাকিস্তানকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। এই জঙ্গি কার্যকলাপের জন্যই জম্মু ও কাশশ্মীর ধীরে ধীরে ‘ধবংস’ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। তার প্রশ্ন, ‘পাকিস্তান কি এসব দেখে না? তারা কি তাদের সঙ্গে যোগ না দেওয়ায় আমাদের ওপর বদলা নিতে চায়? এসব আর কত দিন চলবে?’ পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ করার জন্যও আহ্বান জানান ফারুক। ইসলামাবাদের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘ওরা চাইছে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করবে। তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কাশ্মীর।’ গণমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, কাশ্মীরে সাম্প্রতিক একের পর এক জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনায় কয়েক দিন আগেও সরব হয়েছিলেন ফারুক। চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি। গত রোববার সোনমার্গের কাছে জঙ্গি হানায় ছয় শ্রমিক ও এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার পরও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কাশশ্মীর কখনো পাকিস্তান হয়ে যাবে না। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে চাইলে অবিলম্বে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ করা উচিত।’ ইসলামাবাদ সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ না করলে, তার ‘পরিণাম’ মারাত্মক হবে বলেও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোনমার্গে হামলার দায় স্বীকার করেছিল দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের এক জঙ্গিগোষ্ঠী। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা থেকে এই সংগঠনের জন্ম। রোববারের ঘটনার পরও কাশ্মীরে একাধিক জায়গায় জঙ্গিরা হানা দিয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় এক সাধারণ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। সেই দিনেই গুলমার্গে সেনাবাহিনীর গাড়িতেও হামলা হয়েছিল। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় দুই সেনা ও নিরাপত্তাবাহিনীর দুই মালবাহকের। এই আবহেই চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ফারুকপুত্র তথা জন্ম ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ।