মোঃ সোবাহান হাওলাদার,:
* মহিপুর থানা ৯ নং ধুলাসার ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড চরচাপলী নিবাসী (৩৫) বছরের বিধবা মোসাঃ হোসনে আরা এবং তাঁর মেয়ে শাহিনুর (৫৫) বছর এর পঙ্গু জীবনে স্বামী কাকে বলে তাহা দেখতে, চিনতে এবং জানতে পারে নাই, কোনদিন । এই দুই মা মেয়ের সংসার চলছে খুব কষ্টের অভাবে ।
মেয়ে শাহিনুর জানান আমাদের ঘরে একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
শ্রমজীবী বিধবা নারী হোসনেআরা বেগমের জরাজীর্ন কুটির খানি চোখে পরতেই মনেপরে, পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের আসমানি কবিতার দুই লাইন।
“বাড়িটা তাদের পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটু খানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পরে পানি!
কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার ০৯ নং ধুলাসার ইউনিয়নে ৭ নং ওয়ার্ড চরচাপলী গ্রামে এদের বাড়ি ।
গত ১৯৯৬ ইং সনের,
সিডার বন্যার আগে সরকারের নেতা কর্মীদের সহযোগিতায় ছোট্ট একটি টিনের ঘর পেয়েছে, চালের টিনে গাছের পাতা পরে টিন ছিদ্র হয়ে জরাজীর্ণ হয়েছে, সিডার, আম্পান, বুলবুল, আরো বন্যায় অনেক খতি হয়েছে । এখন একটু বৃষ্টি হলে ঘরে পরে পানি।
১৯৯৬ ইং পর থেকে এতো ঘূর্নিঝড় গেলো এ পর্যন্ত আমাদের কোন অভাবে কোন মেম্বার এবং কোন চেয়ারম্যান এর সহযোগিতা পাইনি ।
আমরা আমাদের জীবিকার তাগিদে যেন সংগ্রামী যুদ্ধ করে যাচ্ছি। কখনো মানুষের জমিতে ডাল মরিচ তুলতে হয়। কখনো নদীতে খুচুইন জাল টেনে, কখনো নদীর তীরে ছোট ছোট খাদা কুয়া সেচকরে মাছধরে।
সেই মাছ ডালায় ভাগা করে বিক্রি করতে নেমে পরেন পাড়াগাঁয়ে।
আবার কখোনো তাদেরকে দেখাযায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত বাড়াতে। হোসনে আরা আরো বলেন আমার এক ছেলে, তিন মেয়ে, আমার ছেলে আরও ৩০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। আমার ছোট দুই মেয়ে বিবাহ দিয়েছি তারা ঢাকা থাকেন এবং গার্মেন্টস করেন।
বড় মেয়ে পঙ্গু একে নিয়ে আমি বাড়িতে আছি। আমার আগের মতো শক্তি নেই, আমি এখন দিন বাঁচি দিনমরি আমার এখন যে রোগ আমি আমার ওষুধের টাকা গুছাইতে পারছি না।
আমি মরে গেলে আমার এই মেয়ের কি হবে। অভাবের ঘানী যেন পোড় খাইয়ে দিয়েছে এদের জীবনকে।
শত কষ্টের মাঝেও এরা ত্রাণের অপেক্ষায়। কিন্তু অভাব তাদের সে স্বপ্ন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের আমলে এত ত্রাণ দিয়েছে, কিন্তু ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, আমাকে কখনো কোনো ত্রাণ দেয়ার ভূমিকা রাখে নাই, আরো আমাকে গালমন্দ করে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিতেন ।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের কিছুদিন আগে, তালিকা করে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা,
বড় বালতি, সাবান, হুইলের গুঁড়া সহ বিভিন্ন সামগ্রী অনেককে দিয়েছেন,
আমি গিয়েছি শহীদুল ইসলাম তাও আমাকে দেন নাই, অথচ শহিদুল ইসলাম, নিজের ফ্যামিলিতে পাঁচ-ছয়টি নাম এর টাকা ও মালামাল নিয়েছেন, এইসব পাপে সরকার পতন হয়েছে ।
মর্মাহত মনে পঙ্গু শাহিনুর বলেন।
“ভাই তুমি মোগো গ্রামের একমাত্র সাংবাদিক,,
মোঃ সোবাহান হাওলাদার ভাই (যিনি বর্তমানে “দৈনিক ভোরের কথা “পত্রিকায় বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে পটুয়াখালীতে নিযুক্ত আছেন)
মোর দুঃখের কথাটি একটু যদি লিখতি। তা হলে মোগোরে কেউ একটা ঘরের ব্যবস্থা করতে। সরকারি কত ঘর মানুষে পায় বিশ হাজার, ত্রিশ হাজার টাকা ঘুষ দেয়। মোদের এত টাকা যোগাইবার সাধ্যনাই। আমি শুধু সরকারি পঙ্গু ভাতা পাই।
আমগো কষ্ট দেইখা মানুষের দয়া হইতেও পারে। ভাই দেশে দয়ার মানুষ আছে। তারা হয়তো যানেনা আমরা দুই মায়েজি যে কষ্টে আছি । মা, মেয়ের ব্যথিত কান্না ও দুঃখের, মনের কথা গুলো আমার কাছে জ্বলন্ত সত্য।
গ্রামে প্রভাবশালীদের বাড়িতে ত্রানের ঘর গুলো তার জ্বলন্ত প্রমান।
কিছু প্রভাবশালীরা তাতে বর্ষার লাকড়ি ঘরের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ এ সকল মা বোনদের মতো আজ অর্থ, অভাবে প্রাপ্য হিসেবে বঞ্চিত অনেক মানুষ ।
মোঃ তরিকুল ইসলাম মৃধা জানান আমাদের এলাকায় এদের মতন গরীব অসহায় লোক খুব কম আছে। তারা শুধু ঘরবাড়ি না, যে-কোন ত্রান সামগ্রী পাওয়ার উপযোগী দরকার।
০৯ নং ধুলাসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, আব্দুর রহিম জানান এই ইউনিয়নের ভিতরে এই ফ্যামিলির চেয়ে অসহায় ফ্যামিলি আমার মনে হয় আর কেহ নাই। মোঃ ছাবের আহম্মেদ জানান ঘটনা সত্য এদের প্রতি আমাদের নজর থাকবে ।
জনাব মোঃ আঃ সোবাহান হাওলাদার, সাবেক ইউপি সদস্য ফেরদৌস আলম, মোঃ তাওহীদ, মোঃ আবুল, মোঃ মহিবুল্লাহ, মোঃ মাসুদুর রহমান রাসেল, সহ আরো অনেকে বলেন এরা আসলে অনেক গরীব, অসহায় । আমাদের এলাকার আমরা যদিও কিছুই করতে পারছি না এদের জন্য , তবে সামনের দিকে চেষ্টা করব, তাদের কিছু পাইবার জন্য, দেয়ার জন্য, ইনশাআল্লাহ।
হোসনেআরা আরও জানান, চলমান করোনায় সরকারের এত ত্রাণ যাচ্ছে অথচ আমাদের ভাগ্যে কোন ত্রাণ জোটে নাই। মহিব্বুর রহমান (মহিব) এর ত্রাণ তহবিল থেকে যাহা দিয়েছে সবই আমরা পাইছি,
সে ধুলাসার আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে যেতে বলেছেন, সেখান থেকে আমি ত্রাণ নিয়ে এসেছি এবং বাড়িতে বসেও মাক্স, কম্বল এবং খাবার, পেয়েছি, সাংবাদিক,, মোঃ আঃ সোবাহান হাওলাদার দিয়ে গেছেন। পুরুষ এবং মহিলা মেম্বারের কাছে গিয়ে কয়েকবার কেঁদে এসেছি, ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি ত্রাণ এবং একটি ঘর পাওয়ার জন্য, কিন্তু আমাদের কপালে আজও জোটেনি,