আজ: সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   | সময়: রাত ৪:১৯ |

স্মার্টফোনে গিলে  খেলো চিঠির বক্সঃ 

রেজাউল- ঝিনাইদহঃ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় কদর নেই  ঝিনাইদহ জেলাসহ  কোটচাঁদপুর উপজেলার পৌর শহরের এস আই সড়কের পাশে  মাটিতে বসানো লোহার  তৈরি চিঠির বক্সের। পোস্ট অফিসের কারণে এই এলাকাটির নাম করণ করা হয়েছে পোস্ট অফিস মোড়। পোস্ট অফিস মোড়ে পরিত্যক্ত এ বাক্সটি শুধু মাটিতে বসানো আছে সেটির ব্যবহার নেই। ঠিক কত বছর আগে এ বাক্সে চিঠি পড়েছে তার হয়তো সঠিক তথ্য খুঁজেও পাওয়া যাবে না? কারণ এখন আর ডাক বিভাগ বা পোস্ট অফিসের সামনে ঝুলিয়ে বা মাটিতে পুতে  রাখা চিঠিপত্রের বাক্সে চিঠি পড়ে না। কিন্তু ৯০ দশকের দিকেও এ বাক্সের যথেষ্ট কদর ছিল। এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা এ বাক্সের কদর কারো কাছে নেই। এক সময় দূর থেকে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল হাতে লেখা চিঠিপত্র। দূরে থাকা প্রিয়জন, আপনজন কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে তথ্য এবং মনের ভাব আদান-প্রদান হতো কাগজে লেখা চিঠির মাধ্যমে। যার হাতের লেখা যত সুন্দরচিঠির সৌন্দর্য তত বেশি। রং বে-রঙের কলম দিয়ে চিঠি লেখা হতো আপনজনদের উদ্দেশে। হতো পত্রমিতালী।পোস্ট অফিসে বা ডাকবিভাগের বাক্সে রাখা হতো চিঠি। পোস্ট মাস্টার, রানার বা ডাকপিয়নের হাত হয়ে সে চিঠি পৌঁছে যেত কাঙ্খিত মানুষের হাতে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতে হতো প্রিয়জনদের চিঠির প্রত্যাশায়। গ্রামের লোকজন পথ চেয়ে থাকতো খাকি পোশাক পরা ডাকপিয়নের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাকপিয়নের দিয়ে যাওয়া চিঠি হাতে পেয়ে কেউ উল্লাসে মেতে উঠতো আবার দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয়জনদের কাছ থেকে কোনো চিঠি না এলে মনে অজানা ভয় কাজ করতো। কাঙ্খিত চিঠি খুলে কেউ কাঁদতো, আবার কেউ আনন্দে আত্মহারা হতো। সেই চিঠির প্রচলন এখন আর নেই। চিঠির সুখ দুঃখ মাখা কাহিনীগুলো এখন যেন শুধু একটা গল্প। ৯০ দশকের আগের লোকেরা চিঠিপত্রের সঙ্গে পরিচিতি থাকলেও বর্তমান প্রজন্ম পরিচিত মোবাইল ফোনের সঙ্গে। সঙ্গে আছে স্মার্ট আরও নানা ধরনের ডিভাইস। তাই এ যুগে যেন চিঠির কোনো মূল্যই নেই। সেকেন্ডের মধ্যেই হাজার হাজার মাইল দূরের মানুষের সঙ্গে কথা হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে যন্ত্রের সাহায্যে। ইন্টারনেট আর যান্ত্রিক যোগাযোগের উন্নতির ফলে হারিয়ে গেছে চিঠি।

ফলে চিঠি নিয়ে আর ব্যস্ততা নেই ডাক অফিসগুলোতে।নেই ডাক পিয়ন বা ডাক বাক্সের কদর। পোস্ট অফিস পাড়ার বাসিন্দা আক্কাস আলী বলেন, জন্মের পর থেকেই দেখছি এই চিঠর বাক্স টি এখানে আছে।এক সময় অনেকেরই দেখতাম চিঠি বাক্সতে ফেলতে এখন আর দেখি না। কারণ যুগের পরিবর্তন হয়েছে সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। তবে ডাক বাক্সটি পোস্ট  অফিসের স্টাফরা প্রতিদিনই খুলে তবে কোন চিঠি এতে থাকে না। কোটচাঁদপুর উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার নারায়ণ চন্দ্র গড়ায় বলেন, এখন অডিনারি চিঠির  ব্যবহার নেই। কিছু আছে সেগুলো রেস্ট্রি করে পাঠানো হয়। আধুনিকতার ছোঁয়া সব হারিয়ে গেছে অনলাইনের যুগ সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। স্মার্টফোনে সারা বিশ্বের সাথে সব রকম যোগাযোগ করা হয়। যার কারণে এনালকের ব্যবহার উঠে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top