আজ: সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   | সময়: বিকাল ৫:৫৭ |

৫০ বছর প্রতিক্ষার পর কালাইয়ে স্বেচ্ছা শ্রমে রাস্তা নির্মাণ। 

লিটন তারুকদার, কালাই(জয়পুরহাট)প্রতিনিধি:

কাজ শুরু করেছেন। রাধানগর গ্রামের তিন মাথা মোড় থেকে একই এলাকার এবতেদায়ী মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় ৩শ ফিট কাঁচা রাস্তাটিতে ইট বিছানোর কাজ চলছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে  রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা সমাজ সেবক ও অধ্যক্ষ আব্দুল করিমের নেতৃত্বে ওই গ্রামের নানা বয়সী শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মান কাজে অংশ গ্রহন করেন। রাস্তাটির নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে আশপাশের ৪/৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের কষ্ট লাঘব হবে বলে এলাবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানান,রাধানগর এলতা,ইমামপুর,হাটশেখা আদর্শ গ্রামসহ ৫/৬টি গ্রামের প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মনুষের কাঁচা রাস্তা থাকলেও তা ছিল চলাচলের অনুপযোগী। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে এমন দূরাবস্থা থাকলও দেখার কেউ ছিলনা। ফলে সঠিক সময়ে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে না পারায় কৃষি পণ্যেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত ছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। এ ছাড়াশিক্ষা ও চিকিৎসা থেকেও তারা পিছিয়ে ছিলেন বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।

রাধানগর গ্রামের আব্দুল হামিদ, আলম হোসেন, পার্শ্ববর্তী  ইমামপুর গ্রামের হাফিজার রহমান, সাইদুর রহমান সহ অন্যন্য কৃষকরা জানান, কাঁচা রাস্তাটি বর্ষায় কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয় বলে তারা ধান, পাট, শাক-সবজি সহ তাদের উৎপাদিত কৃষি ফসল বাজারজাত  করতে পারতেন না বলে যুগের পর যুগতারা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। এ ছাড়া প্রসূতি সহ জরুরী রোগীদের প্রয়োজনের সময় হাসপাতালে নিতে পারেননি।

রাধানগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী  মিম আক্তার, স্কুল শিক্ষার্থী মুরাদ হোসেন ও হোসাইন আহম্মেদ সহ এলাকার শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্ষার পূরো সময় তারা তাদেওর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেনি বলে শিক্ষা গ্রহনে পিছিয়ে পরেছে। তাই এত বছরেও এ এই এলাকা থেকে আজ পর্যন্ত সরকারি কোন উচ্চ পদে কেউ চাকুরীর সূযোগ পায়নি।

দেশে সরকার  ও জনপ্রতিনিধি বদল হলেও তাদের এই রাস্তাটি পাকাকরনের কেউ কোন উদ্যোগ নেননি বলে এত দিন তারা পিছিয়ে ছিলেন। এ অবস্থায় এই রাস্তাটির অনন্তঃ ইট বিছানোর কাজ শেষ হলে তারাও দেশের উন্নয়নের মূল ¯্রােতে সংযুক্ত হতে পারবেন বলেও আশা করেন এলাকাবাসীরা।

স্বেচ্ছা শ্রমে রাস্তা নির্মান কাজের উদ্যোক্তা অধ্যক্ষ আব্দুল করিম জানান, ‘ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো উন্নয়নের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি। তাই গ্রামের সাধারন মানুষদের নিয়ে নিজেরাই রাস্তাটিতে ইট  বিছানোর কাজ শুরু করেছি। আগামী দু এক দিনের মধ্যে কাজটি সম্পূর্ন করতে পারব বলে আশা করছি।’

এদিকে বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন। কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আখতার জাহান জানান,”প্রশাসনের উদ্যোগেসাধারন মানুষকে আত্ম নির্ভশীল হতে ব্যাপক ভাবে সচেতন করা হচ্ছে। বিষয়টিতারই অংশ বলে স্বেচ্ছাশ্রমে যারা রাস্তাটি নির্মান করছেনতাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” সেই সাথে এ ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে প্রশাসনের সহযোগীতা থাকবে বলেও জানান তিনি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top