বল হাতে ট্রাভিস হেডের স্পিন ভেল্কির পর ওপেনার ম্যাথু শর্টের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তৃতীয় ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ নির্ধারনী পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া ডিএলএস মেথডে ৪৯ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতলো অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০২০ ও ২০২২ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিলো অসিরা। ব্রিস্টলে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭ ওভারে ৫৮ রানের সূচনা পায় ইংল্যান্ড। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৭ বলে ৪৫ রান করা ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্টকে থামিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার অ্যারন হার্ডি। রানের খাতা খোলার আগেই হার্ডির দ্বিতীয় শিকার হন তিন নম্বরে নামা উইল জ্যাকস। ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর শক্ত হাতে হাল ধরেন আরেক ওপেনার বেন ডাকেট ও অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলে তৃতীয় উইকেটে ৯৮ বলে ১৩২ রান যোগ করেন দু’জনে। এই জুটিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ডাকেট। ডাকেটের সেঞ্চুরির সাথে ব্রুকের অর্ধশতকে ২৫ ওভারের দ্বিতীয় বলে ২শ রান তুলে শক্ত অবস্থানে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। এরপরই ছন্দপতন হয় ইংলিশদের পথ চলায়। পরের ২৪.৩ ওভারে বাকি ৮ উইকেটে ১০৭ রান তুলতে পারে ইংল্যান্ড। ৪৯.২ ওভারে ৩০৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ইংলিশদের শেষ ৮ উইকেট নিয়েছেন তিন স্পিনার এডাম জাম্পা, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও হেড। ২৫তম ওভারের শেষ বলে ব্রুককে থামিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ধসের পথ দেখান জাম্পা। ৩টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৫২ বলে ৭২ রান করেন ব্রুক। এরপর মারকুটে ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোনকে খালি হাতে ফেরান জাম্পা। জাম্পার সাথে উইকেট শিকারে মাতেন ম্যাক্সওয়েল। জেমি স্মিথ ও ম্যাথু পটসকে ৬ রানে বিদায় দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার অষ্টম বোলার হিসেবে আক্রমনে এসে ইংল্যান্ডের সেঞ্চুরিয়ান ডাকেটকে সাজঘরে ফেরত পাঠান হেড। ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯১ বলে ১০৭ রান করেন ডাকেট। শেষ দিকে ইংল্যান্ডের আরও ৩ উইকেট তুলে নেন হেড। ৬.২ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন হেড। ওয়ানডেতে অষ্টম বা তার পরের দিকের বোলার হিসেবে আক্রমনে এসে সেরা বোলিং ফিগারে তৃতীয় স্থানে নাম লেখালেন হেড। ৩১০ রান তাড়া করতে নেমে ৭ ওভারেই ৭৮ রান সংগ্রহ করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার শর্ট ও হেড। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে পেসার ব্রাইডেন কার্সের শিকার হন ২৬ বলে ৩১ রান করা হেড। হেড ফিরলেও অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি ধরে রাখেন শর্ট। ছক্কা মেরে মাত্র ২৩ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। দলের রান ১’শ পার করে ইংলিশ পেসার পটসের বলে আউট হন শর্ট। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩০ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। ১৩তম ওভারে দলীয় ১১৮ রানে শর্ট ফেরার পর অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন এ ম্যাচের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিশ। দু’জনের ৪৭ রানের জুটিতে ২০.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৬৫ রানে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর বৃষ্টি নামলে বন্ধ হয় খেলা। পরবর্তীতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বৃষ্টি আইনে জয় পায় অসিরা। বৃষ্টি আইন নিয়মে ২০.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১১৬ রান থাকা দরকার ছিলো। সেখানে ৪৯ রান বেশি করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ৩৬ ও ইংলিশ ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হন অস্ট্রেলিয়ার হেড। এর আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিলো ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।