আজ: সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,   | সময়: বিকাল ৩:০৯ |

বাংলাদেশের একমাত্র ২২ মাথা খেজুর গাছটি মৃতের পথেঃ 

(ঝিনাইদহের  কোটচাঁদপুর বহরমপুর মাঠ) 

  মোঃ আশরাফুজ্জামান  :

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর বহরমপুর মাঠে  ৩০ বছর ধরে ২২ মাথা নিয়ে অযত্নে আর অবহেলায় দাঁড়িয়ে আছে একটি খেজুর গাছ।  ধারনা করা হয় এটিই বাংলাদেশের একমাত্র খেজুর গাছ, যার মাথা আছে ২২ টি।

অন্যের থেকে ভিন্নতা মানেই তা আলাদা বা ব্যতিক্রমী। (ইউএসআইডি) আমেরিকার জনগণের পক্ষ থেকে তৈরী সড়কের পাশে বহরমপুর গ্রামের মাঠে দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছে আজব এই গাছ। একটি-দুটি নয় যার আছে ২২ টি মাথা। মাটিতে একটি মাত্র গাছ দাড়িয়ে থাকলেও উচু করে দাড়িয়ে আছে একাধিক মাথা। গাছের প্রত্যেকটি মাথাই আলাদা আলাদা। ছিল সবুজ  সতেজ পাতাও। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষই গাছটিকে একনজর দেখতে ভিড় করেন।গাছটির আনুমানিক বয়স প্রায় ৩০ বছর। এমন আজব গাছটির মালিক  ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের মৃত আবু তালেব মুন্সীর ছেলে ডাক্তার সলেমান মুন্সী।

সরেজমিনে উপজেলার বহরমপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের একপাশে মেহগনি ও আম বাগানের এক কোনে খাড়া হয়ে  দাড়িয়ে আছে ২২ মাথা ওয়ালা খেজুর গাছটি। দেখে মনে হয় কোন শিল্পী নিপুন হাতে গাছের মাথা গুলো সাজিয়ে রেখেছে। অবাক করার বিষয় গাছটির মূলের চেয়েও ২২ গুন মাথা নিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছে। একসময় রস আহরোন করা হলেও এখন তা আর করেনা। তবে এই বাগানে অন্যান্য গাছ থাকলেও মালিক ব্যতিক্রমী এই গাছটি এখনও কাটেননি।প্রকৃতির এক বিচিত্র সৃষ্ট এই খেজুর গাছটির। এখনও জীবিত আছে ১৪টি মাথা, বাকী ৮ টির পাতা না থাকলেও কান্ড আছে। কিন্তু জিবিত ১৪ টি মাথাও চরম ঝুকির মধ্যে আছে, পাতা গুলি শুকানোর পথে।  অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এ গাছটিকে একনজর দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে আসছে দর্শণার্থীরা।

বহরমপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল জানান, এই গাছটিতে অতিরিক্ত সাপ থাকতো। যার কারনে গাছ থেকে আর রস সংগ্রহ করতে পারেনা। আবার সাপের কারনে খেজুর গাছে ফল ধরলেও সেগুলো পাড়া যেতো না। গাছেই ফলপেকে নষ্ট হয়ে যেত। তার কথার প্রমানও মেলে সরেজমিনে গাছটি দেখতে গেলে গাছের পাশের ১টি জাত গোক্ষর সাপের দেখা পাওয়া যায়।  প্রথমে একটা দুইটা করে মাথা হতে থাকে গাছটির। পরে আরো এতো মাথা হয় যে গুনতে পারা যেত না। এরপর কিছু মাথা মারা যায় এখন ১৪টি মাথা জীবিত আছে। তবে এই গাছটি দেখতে অনেক দূর থেকে লোকজন আসে।গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, এই গাছটি অনেক দিন আগেই এমন হয়েছে। প্রথমে তিনটি মাথা হয়। তারপর আস্তে আস্তে অনেক মাথা হয়েছে। একসময় ওই মাথা গুলো থেকে রস আহরণের চেষ্টাও করা হয়েছে, কিন্তু কেউই পারেনি। ঢাকা থেকে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে আসা দর্শণার্থী শিপন  জানান, এমন ঘটনা একেবারেই বিরল। আল্লাহর এক ব্যতিক্রমী নিদর্শন। আমরা এই গ্রামে বাড়িতে আসলেই একবার হলেও এ গাছটি দেখতে আসি। দেশের বিভিন্ন এলাকা  থেকে গাছটিকে একনজর দেখতে মানুষ আসছে। প্রকৃতির এক অসাধারণ লিলা এই গাছটি। কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিবুল হাসান বলেন, এটি একটি জেনেটিক সমস্যা। হরমোন জনিত কারণে এক বীজপত্রি উদ্ভিদে একাধিক শাখা প্রশাখা হতে পারে। তবে সেটা হয় খুবই কম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top