আজ: বৃহস্পতিবার, ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,  | সময়: রাত ১২:৪৪ |

গোবিন্দগঞ্জে রাজা পেপার মিলের অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ইছামতি গজারীয়া নদীতে

মনিরুজ্জামান মিন্টু 

দূষিত বর্জ্যের দুর্গন্ধ আর কারখানার বয়লারের কালো ধোয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। ক্ষতিগ্রস্থরা প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ করেও পাচ্ছেন না প্রতিকার।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের চাপড়িগঞ্জে অবস্থিত এই মিলের সামনে কোন সাইনবোর্ড না থাকলেও চলছে রাজা গ্রুপের রাজা পেপার এন্ড বোর্ড মিল নামে। এই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্র ফেলা হচ্ছে  ইছামতি নদীতে তা-ফেলায়,চাপরীগঞ্জ  কামারদহ ও খাঁ-পাড়াসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। কারখানার বর্জ্য সরাসরি খালের পানিতে ফেলায় দূষণের কবলে ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে দেশিয় মাছসহ জলজপ্রানী । কারখানা থেকে নির্গত কালো ধোয়া ও বর্জ্যের কারণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে ফসলি জমিতে। এছাড়া বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার মানুষ। রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে গোবিন্দগঞ্জের চাঁপড়ীগঞ্জে ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে রাজা পেপার মিল। গত ৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত পেপার মিলটি উৎপাদন চালিয়ে আসছে। কারখানার বর্জ্য পরিশোধন না করেই সরাসরি ফেলা হচ্ছে ইছামতিগজারী নদীতে। বর্জ্য মিশ্রিত পানি অন্তত ১৫ কিলোমিটার দুরে গিয়ে মিশেছে করতোয়া নদীতে। খালের পানি বিষাক্ত বর্জ্যে কালচে হয়েছে,দিনের পর দিন বজ্র ফেলায় দিন দিন ভরাট হচ্ছে নদীটি। কোথাও বর্জ্যের স্তুপ হয়েছে। আবার কিছু স্থানে ময়লা-অবর্জনায় পোকামাকড় দেখা দিয়েছে। খাল থেকে তীব্র পচা দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। দুষিত বর্জে এলাকায় দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। বিরুপ প্রভাব পড়েছে জীববৈচিত্যে ক্ষতি হচ্ছে কৃষিতেও। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়েছেন এলাকার মানুষ।

পেপার মিলটির গা-ঘেঁষেই চাঁপড়ীগঞ্জ বাজার, ৫০০ গজ দরুত্ব এসএম ফাজিল মাদ্রাসা,চাপরীগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আছে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খালের দুষিত বর্জ্যরে ছড়ানো দুর্গন্ধে বাজারসহ স্কুলে আসা-যাওয়া করতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘বিষাক্ত পানির কারণে খালে আর দেশিয় প্রজাতির মাছ দেখা যাচ্ছেনা। দূষিত পানিতে প্রায়ই ব্যঙ, সাপসহ জলজপ্রাণি মরে গিয়ে ভেসে উঠছে। অসাবধাণত যদি  কেউ খালের পানি ব্যবহার করে তাহলে চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে হয়। 

এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মেজবাহুল হকের বক্তব্য জানতে  মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তবে তাদের বর্জ্র ফেলানোর সময় এক কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, মিলের মালিক পক্ষের নির্দেশেই ফেলানো হয় এসব বর্জ্র।

এবিষয়ে মোবাইলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানার বক্তব্য জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগ পওয়ার বিষয়টি শ্বিকার করে  জানান,এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, নেয়া হবে ব্যবস্থা । 

এলাকাবাসী বলেন, নাম মাত্র অভিযান বা তদন্ত নয় কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তাদের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top