
ইরানের জাতিসংঘ মিশন তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তির অধীনে প্রত্যাহার করা নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপের জন্য ফ্রান্সের ‘হুমকির’ নিন্দা জানিয়েছে। গতকাল বুধবার ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের গণমাধ্যম এই খবর জানিয়েছে।
গত সোমবার ফ্রান্স বলেছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর কারণে ইউরোপীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে জার্মানি এবং ব্রিটেনের সাথে তারা ‘এক সেকেন্ডের জন্যও ইরানের ওপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে দ্বিধা করবে না’। কারণ, তেহরান এবং ওয়াশিংটন একটি নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘে ইরানের মিশন দেশটির ‘ইসনা’ সংবাদ সংস্থা প্রচারিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘হুমকি এবং অর্থনৈতিক ব্ল্যাকমেইলের আশ্রয় নেওয়া সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’ ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেন, চীন ও রাশিয়ার সাথে ২০১৫ সালে ইরানের সাথে করা পরমাণু চুক্তির পক্ষ, যা থেকে তিন বছর পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহার করে নেয়। চুক্তির অধীনে পক্ষগুলো ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়াটি চালু করতে পারে, যা ইরানের অমান্যের ওপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করবে।
এই বিকল্পের মেয়াদ শেষ হবে অক্টোবরে। দীর্ঘদিনের শত্রু ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১২ এপ্রিল থেকে তাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় ব্যস্ত রয়েছে, যা একটি নতুন চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আববাস আরাঘচি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিনি আলোচনার জন্য জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন সফরে যেতে ইচ্ছুক।
ইরানের জাতিসংঘ মিশন তাদের চিঠিতে বলেছে, ‘হুমকি বা চাপের মুখে প্রকৃত কূটনীতি এগিয়ে যেতে পারে না।’ ‘যদি ফ্রান্স এবং তার অংশীদাররা সত্যিই কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী হয়, তাহলে তাদের অবশ্যই বলপ্রয়োগ ত্যাগ করতে হবে। ভারতের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ১৫ জনের প্রাণহানি ভারতের কলকাতার এক হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। পুলিশ গতকাল বুধবার জানায়, কয়েকজন জানালা দিয়ে ছাদে উঠে পালিয়ে যানকলকাতা থেকে এএফপি এ তথ্য জানায়।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অগ্নিকাণ্ডের পর কলকাতার পুলিশ প্রধান মনোজ ভার্মা এএফপিকে বলেন, হোটেলটির কক্ষ ও ছাদ থেকে বেশ ক’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘এই ঘটনায় দুই শিশু ও এক নারীসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।’ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দেড় কোটির বেশি মানুষের ব্যস্ত মহানগর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী। রাজ্যটি তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি শাসিত। মনোজ বলেন, ‘হোটেলটি একটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। অনেক লোক শ্বাসরোধে মারা গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। জনবহুল কলকাতায় অবস্থিত ঋতুরাজ হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে ৮৮ জন অতিথি ছিলেন।
এই ঘটনায় প্রায় এক ডজন মানুষ দগ্ধ হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের অভাব ও নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের কারণে ভারতে প্রায়ই ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকে। গত বছর, পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের পাটনার একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ছয়জনের প্রাণহানি ঘটে। সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া কলকাতার ওই ভবনের আগুনের ছবি প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে ‘অনেক লোককে ভবনের জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।’ কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ সংবাদপত্র জানিয়েছে, আগুন থেকে বাঁচতে গিয়ে বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে কমপক্ষে একজন মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।