
১০ মার্চ-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মিরপুর ‘পল্লবী থানা’ এলাকার লালমাটিয়া কালসী নিজ বাড়ীর সামনে পবিত্র শবে-বরাতের রাতে নির্মম ও বর্বরোচিত হামলায় গুলিবিদ্ধ হন গৃহবধু শাহিনুর বেগম (৩৭) এবং তার ভাই মোঃ জসিম কাজী (৪৫)। দুই ভাই-বোনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি করে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করায় আজ ১০ মার্চ-২০২৫ (সোমবার) ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মানববন্ধ’ কর্মসূচী পালন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সহ মিরপুরের স্থানীয় এলাকাবাসী। মানববন্ধনে গৃহবধু শাহিনুর বেগম এবং তার ভাই জসিম কাজীকে গুলিবিদ্ধের ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সহ ‘সন্ত্রাস মুক্ত’ মিরপুরের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও মিরপুরের স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘটনাক্রমে উল্লেখ্য যে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারী-২০২৫ ভোর আনুমানিক ০৩.৩০ ঘটিকার সময় পবিত্র শবে-বরাতের রাতে নামাজ পড়িয়া বাসায় ফেরার পথে পল্লবী থানাধীন সেকশন-১১, ই-ব্লকস্থ লালমাটিয়া রোড-১ কালশি নিজ বাড়ীর সামনে পাঁকা রাস্তার উপর পৌছাইলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের দুর্ধষ সন্ত্রাসীরা বেআইনী ভয়ঙ্কর অস্ত্রশস্ত্র সহ ভুক্তভোগী পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে দুই ভাই বোনকে পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলিবিদ্ধ করে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে গুরুতর জখম করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। উক্ত লোমহর্ষক ঘটনার সংবাদ জাতীয় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আবুল কাইয়ুম এর নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোঃ মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ মূমর্ষ অবস্থায় গৃহবধু শাহিনুর বেগমকে থানার গাড়ীতে করে নিয়ে যান এবং কম্পোজকৃত একটি এজাহারে স্বাক্ষর করতে বলেন। নিরক্ষর শাহিনুর বেগম এজাহারে স্বাক্ষর করিয়া জানিতে পারেন যে, বিষয়টি তুচ্ছ ঘটনা হিসাবে পল্লবী থানা পুলিশ একটি জামিনযোগ্য মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং-৩১, তারিখ-১৬.০২.২০২৫ এবং ঘটনায় জড়িত দুইজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করিয়া আদালতে প্রেরন করেন। পরবর্তীতে আসামীরা দ্রুত জামিনে মুক্ত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে আমাদের পরিবারের প্রাণ নাশের চেষ্টা করিতেছে।গুলিবিদ্ধ জসিম কাজী বলেন, আমরা আজ এই মানববন্ধনের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই, এজাহারকৃত আসামী কিশোর গ্যাং লিডার শহিদুল ইসলাম, শরীফ ওরফে ডাসা শরীফ, হারুন, মামুন, সুজন, পিন্টু, শুভরাজ, সোহাগ ওরফে ডিম সোহাগ, রনি ওরফে ব্লেড রনি, আল আমিন, তুহিন, হৃদয় সহ অজ্ঞাতনামা সহযোগী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অগনিত সন্ত্রাসী হামলা, গুম, খুন, অপহরণ, দখলবাজী, চাঁদাবাজীর অভিযোগ থাকা স্বত্তেও ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে এইসব কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা। আজ আমি আহত হয়েছি আগামীতে অন্য কেউ হয়তো হবে। আমি আমার পরিবার এবং মিরপুর এলাকাবাসীর জান মালের নিরাপত্তা চাই। স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সন্ত্রাসী হামলা এবং গুলি বর্ষনের ঘটানার সময় মহল্লার একটি কুকুর ব্যাপক চিল্লাফাল্লা করায় অস্ত্রধারীরা সেই কুকুরটিকেও গুলি করতে দ্বিধা করেনি। আমরা এলাকার সাধারণ বাসিন্দা, ভয়ে কখনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনা। প্রশাসনের লোকজনও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমরা মিরপুর বাসী‘র কোন নিরাপত্তা নাই, কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি পুরো মিরপুরবাসী। মিরপুরকে ডিএমপি কতৃক রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় মিরপুরের কিশোর গ্যাং আরো বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। অগনিত ব্যক্তি এবং পরিবার প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী হামলা, গুম, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং হত্যার শিকার হচ্ছে এইসব চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীদের হাতে। আমরা মিরপুরের সাধারণ বাসিন্দাগণ ‘সন্ত্রাস মুক্ত’ মিরপুর চাই।